শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০১:৩০ অপরাহ্ন

News Headline :
পার্বত্যবাসীর কল্যাণে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী মানিকছড়ি পাহাড়ে মানুষের পানি সংকট  সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে সিএইচটি রেগুলেশন ১৯০০ বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিত খাগড়াছড়িতে ২দিনব্যাপী প্রোটিন অলিম্পিয়াড ও স্কুল ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত খাগড়াছড়িতে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত রক্তদাতারা মানবিক গুণের অধিকারী’-কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর দেশপ্রেম না থাকলে কৃষিখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সম্ভব হতো না- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী অরাজকতা, নাশকতা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে কাম্য হতে পারে না- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে সৌহার্দ্র ও সম্প্রীতির বন্ধনে আগলে রেখেছেন- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী

রাঙামাটিতে ড্রাগন চাষে সহকারি শিক্ষক রনেল চাকমার সফলতা

দৈনিক পার্বত্য কণ্ঠস্বর
  • আপডেট টাইম : রবিবার ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ২৫৯২ বার পঠিত

বিনয় চাকমা, রাঙামাটিঃ বহুমুখী পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ বিদেশী ফল ড্রাগন বারি -১, সাদা ও গোলাপী রঙের জাতের ড্রাগন চাষ করে সফলতা পেয়েছেন রাঙামাটির বন্দুক ভাঙ্গা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মুবাছড়ি গ্রামের রনেল চাকমা। ড্রাগন ছাড়াও তার বাগানে আছে রেড লেডি জাতের পেঁপে, বল সুন্দরী কুল, কাশ্মীর আপেল কুল ও আপেল কুল, বারি মাল্টা -১ ও রাম্বুটানসহ বিভিন্ন জাতে ফলের বাগান। তার সফলতা দেখে গ্রামে অনেকের ড্রাগন চাষের আগ্রহ বেড়েছে।


রাঙামাটিতে পুষ্টিকর ফল ড্রাগনের চাষ দিন দিন বেড়েই চলছে। সফলতা পেয়েছেন অনেক চাষিরা। ড্রাগন চাষের বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখে ড্রাগন চাষ করার পরিকল্পন শুরু করেন সুবলং উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রনেল চাকমা। বর্তমানে ড্রাগন চাষ করে নিজের পরিবারকে করেছেন স্বাবলম্বী।
তিনি বলেন, শিক্ষকতার পাশাপাশি গত ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে রাঙ্গামাটি বনরূপা হর্টিকালচার সেন্টার থেকে বারি ড্রাগন ফল-১ জাতের ৯০ টি চারা নিয়ে ২০টি পিলার দিয়ে প্রথম ড্রাগন ফলের বাগান শুরু করি। এরপর আমার বাবা নিয়তি রঞ্জন চাকমা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর (ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম- ২) ঘঅঞচ -২ ২ প্রকল্পের তালিকাভুক্ত চাষি হওয়ায় বাবাকে পরবর্তী বছর সেপ্টেম্বরে ঘঅঞচ -২ প্রকল্প থেকে ৫০টি চারা প্রদান করা হয়। সে সময় প্রশিক্ষণ ও বিশেষ কারিগরি সহায়তা প্রদান করেন সাবেক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আপ্রু মার্মা এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কিংসুক চাকমা। পরে আরও নিজ উদ্যোগে ৩০টি পিলারে চারা রোপন করি। বর্তমানে ২৫ শতক জমিতে পিলার আছে ৬২টি। প্রতি পিলারে ৪টি করে ২৪৮ টি ড্রাগন চারা আছে। চারাগাছ রোপণের সময় চারা, সার ও শ্রমিক সহ সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে খরচ ১ লক্ষ ২ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, গত বছর মে মাসে প্রথম ফুল আসা শুরু হয়, ফলনের প্রথমে ৪৬ হাজার টাকার ফল বিক্রি করা হয়েছে। এই বছর ফলনের ৫ ম বারের মত ৮২ হাজার টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছি। গাছে এখনো ২০ হাজার টাকার পাকা ফল রয়েছে। ড্রাগন গাছে নতুন ফুল – ফল আসলে সেগুলো নভেম্বরের ১ম সপ্তাহ পর্যন্ত থাকবে।
ড্রাগন গাছগুলো কিছুটা ক্যাকটাজ গাছের মত দেখতে। চারা রোপণের এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গাছে ফুল আসা শুরু করে। ফুল আসার ৪৫ দিনের মধ্যেই ফল হয়। এ গাছ ২০-৩০ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে, প্রতিটি ফলের ওজন ২০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। প্রতি কেজি ফলের দাম বাজারের আলোকে ২শত টাকা থেকে শুরু করে ৫শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়।
ড্রাগন ফল শরীরের জন্য খুব উপকারী। এতে অনেক পুষ্টি রয়েছে। যেমন- ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ই৩, লৌহ, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ই১, ফসফরাস, ভিটামিন ই২, ভিটামিন ঈ ৫। যা মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে বলে এক গবেষণায় জানা যায়।
ড্রাগন ফলের চাষ সম্পর্কে জানা যায়, ড্রাগন ফল সাধারণত সারা বছরেই চাষ করা যায়। অঙ্গজ পদ্ধতি বা বীজের মাধ্যমে ড্রাগন ফলের বংশ বিস্তার হয়ে থাকলেও মাতৃ গুণাগুণ বজায় রাখার জন্য অঙ্গজ পদ্ধতিতে অর্থাৎ কাটিং এর মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা ভালো। কাটিং এর সফলতার হার প্রায় শতভাগ এবং তাড়াতাড়ি ফল ধরে। কাটিং থেকে উৎপাদিত একটি গাছে ফল ধরতে ১২-১৮ মাস সময় লাগে।
রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু মো: মনিরুজ্জামান বলেন, ড্রাগন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। এটি আমাদের দেশে নতুন হলেও বিগত পাঁচ থেকে দশ বছর ধরে প্রচলন ও উৎপাদন শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। তারও ধারাবাহিকতাই রাঙামাটিসহ বিভিন্ন জেলাতে লাভজনকভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে। বর্তমানে রাঙামাটি সদর উপজেলাতে ৪ হেক্টর জায়গাতে ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। যদি আরও কেউ অধিক পরিসরে ড্রাগন চাষ করতে চাই, আমরা সদর উপজেলা কৃষি অফিস তাকে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.


এ জাতীয় আরো খবর..