শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩:৫২ অপরাহ্ন

News Headline :
পার্বত্যবাসীর কল্যাণে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী মানিকছড়ি পাহাড়ে মানুষের পানি সংকট  সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে সিএইচটি রেগুলেশন ১৯০০ বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিত খাগড়াছড়িতে ২দিনব্যাপী প্রোটিন অলিম্পিয়াড ও স্কুল ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত খাগড়াছড়িতে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত রক্তদাতারা মানবিক গুণের অধিকারী’-কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর দেশপ্রেম না থাকলে কৃষিখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সম্ভব হতো না- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী অরাজকতা, নাশকতা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে কাম্য হতে পারে না- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে সৌহার্দ্র ও সম্প্রীতির বন্ধনে আগলে রেখেছেন- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী

রাজনীতি ও শিক্ষকতার পর এবার জনসেবক হতে চায় শিক্ষক আব্দুর শুক্কুর

দৈনিক পার্বত্য কণ্ঠস্বর
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ২৬৪৩ বার পঠিত

দৈনিক পার্বত্য কণ্ঠস্বর, মঙ্গলবার ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন, লামা থেকেঃ লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য জনগণের সেবক হতে চাই। উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নের জন্য সরকারি বা বিরোধী দল প্রয়োজন হয়না। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকলে যে কোন সমস্যা সমাধানসহ ভালো কাজ করা সম্ভব। সকল কাজে জনগণের সহযোগিতা চাই এবং নৈরাজ্যের কোন স্থান নেই এই ইউনিয়নে। বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা লামা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও লামামূখ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আব্দুর শুক্কুর এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

প্রধান শিক্ষক আব্দুর শুক্কুর ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থেকে এলাকার জনগণের পাশে থেকে সরাসরি কাজ করেছেন। আব্দুর শুক্কু র ১৯৯০সাল থেকে ১৯৯৮সাল পর্যন্ত লামা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১সাল পর্যন্ত বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ অাওয়ামীলীগের ক্রান্তিময় সময়ে দীর্ঘ ১১ বছর ছাত্রলীগের রাজনীতি চুকিয়ে তিনি ২০০৪ সালে লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এ দায়িত্ব ২০১৪সাল পর্যন্ত ছিলো। এরপর ২০১৫ থেকে ২০১৯সাল পর্যন্ত লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদকেরর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

আব্দুর শুক্কুর রূপসীপাড়া ইউনিয়নের যেখানে বসবাস করতেন তখন সে এলাকায় কোন বিদ্যালয় না থাকায় বাড়ি থেকে প্রায় ৫কিলোমিটার দূরে হেটে গিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হতো। নিজের কষ্ট ও এলাকার শিক্ষার প্রসার এগিয়ে নিতে তিনি এলাকায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে বান্দরবান ৩০০নং আসনের এমপি পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং ও লামা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইলের শতভাগ সহযোগীতায় ১৯৯৩ সালে লামামূখ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। লামা উপজেলার লামা সদর ইউনিয়ন ও রূপসীপাড়া ইউনিয়নে কোন হাইস্কুল না থাকায় এ দুই ইউনিয়নের সুবিধার্থে লামামুখে এ বিদ্যালয় গড়ে তুলেন। বর্তমানে উপজেলা পর্যায়ে উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষারমান অনেক ভালো। লামামূখ উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে সাড়ে ৭শত জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। আব্দুর শুক্কুর উক্ত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। বর্তমানেও এর দায়িত্ব পালন করছেন।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর শুক্কুর দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ও পরবর্তী প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনাকালে তিনি বলেন, উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ প্রাচীন রাজনৈতিক গণ-সংগঠনের নাম হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্টা হওয়ার পর থেকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ও এগারো দফা আন্দোলন, ৭০’র নির্বাচন পরবর্তী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দিয়ে মোকাবেলা করেছে।এমনকি ১৯৭১ বাংলাদেশ কে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মুজিব বাহিনী গঠন করে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে অতঃপর সতের হাজার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের আত্মদানের বিনিময়ে বাংলাদেশ বিজয় লাভে ভূমিকা পালন করে। ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তাঁর পরিবার কে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটভূমি পরিবর্তন ঘটে যখন স্বাধীনতার মৌলিক চেতনাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় পাকিস্তানী ভাবধারার সামরিক শাসক গোষ্ঠী,তখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ স্বাধীনতার চেতনায় ছিল আপোষহীন।১৯৭৫-৯০ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৮৩ সালের শিক্ষা আন্দোলন এবং সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের দশ দফা রচনায় ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ৯০ সালের সামরিক শাসনের অগ্নিঝরা দিনগুলোতে ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীদের সামরিক শাসকের বুলেটে অনেক তাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।এমনকি ছাত্রলীগের অজস্র নেতা-কর্মীদের ভোরের আলো দেখার সৌভাগ্য হয়নি। ৯৬’র ১৫ই ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার প্রহসন মূলক নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে আত্মাহুতির মাধ্যমে সাধারণ জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৯৬-২০০১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন দল থাকা সত্বেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শিক্ষাঅধিকার, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, বন্যার্তদের জন্য স্বেচ্ছাশ্রম, বৃক্ষরোপণ সহ দেশ গঠন মূলক কার্যক্রমে আত্মনিয়োগ করে। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপি জয়লাভের পর দেশব্যাপী সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর অত্যাচার, নির্যাতন অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ছাত্রলীগের মেধাবী নেতা-কর্মীদের। তখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পরিক্ষিত নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলে।জামাত-বিএনপি স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করার অপচেষ্টা চালালে প্রতিবাদী আন্দোলনেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পরিক্ষিত নেতা-কর্মীরা সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দেয়। পরবর্তী সেনা সমর্থিত সরকার কর্তৃক বিশ্বরত্ন শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে,প্রিয় নেত্রীর কারামুক্তি ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলনে প্রথম সারিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।এরমধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা’র বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্রের ইতিহাস রচনা হয়েছে কিন্তু পরিক্ষিত মুজিব আদর্শ বুকে লালিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী প্রিয় নেত্রীর থেকে পিছু হটেনি প্রিয় নেত্রীর পাশে থেকেছে।
কিন্তু ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী-সুবিধাভোগীদের স্থান হওয়ার কারনে তাদের বদৌলতে আওয়ামী লীগে ও সঙ্গ সহযোগী সংগঠন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনেও অনুপ্রবেশ ঘটে।ইতিমধ্যে আমাদের প্রিয় নেত্রী সহ দলের শীর্ষ নেতাদের নজরে পড়েছে।

আজকে আওয়ামীলীগে সুবিধাভোগীদের কারণে রাজপথের পরিক্ষিত নেতারা প্রায় অসহায়।এরকম পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আওয়ামীলীগ তার অতীত ঐতিহ্য হারাবে। তাই আমরা যারা দুঃসময়ে ছাত্রলীগের হাল ধরেছিলাম তাদের সকলকে স্বস্ব অবস্থান থেকে আওয়ামীলীগের বিরোদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এগিয়ে আসতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় আমি লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের আসন্ন নিবার্চনে আওয়ামীলীগের সমর্থন নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চাই।

আব্দুর শুক্কুর মাষ্টার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওর্য়াডের ইব্রাহীম লীডার পাড়ার মৃত আকবর আলীর পুত্র। তিনি ২০১৭ সাল থেকে লামা উপজেলা দূর্ণীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও লামা মৌচাক কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্বে পালন করছেন। উক্ত প্রতিষ্ঠানে সদস্য রয়েছে সাড়ে ৯হাজার এবং তার মূলধন প্রায় ৩০কোটি টাকা।

আসন্ন লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চান এ রাজনীতিবিদ ও শিক্ষক আব্দুর শুক্কর মাষ্টার। তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান অবস্থা থেকে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। করোনাকালে কর্মহীনদের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। গরিব-অসহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি ৩১ বছর ধরে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ করছি। দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত এলাকা এবং উন্নত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে আগামী ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে চাই। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা প্রতীক পাব বলে প্রত্যাশা করছি। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পার্বত্য মন্ত্রী বীরবাহাদুর উশৈসিং এমপির উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছি। রূপসীপাড়া ইউনিয়ন হবে অন্য ইউনিয়নের চেয়ে ব্যতিক্রমী ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নকে আধুনিক ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.


এ জাতীয় আরো খবর..